সুনামগঞ্জ , বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫ , ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুনামগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা শুক্রবার, লক্ষ্য ১৫ হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটানো ১৫ লক্ষ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ জগন্নাথপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ মাইলস্টোনের বাতাসে পোড়াগন্ধ দোয়ারাবাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১ আমরা ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ভালো শিক্ষকও চাই : জেলা প্রশাসক জলমহাল লুট ঠেকাতে প্রশাসনের দ্বারে মৎস্যজীবীরা মাইলস্টোন স্কুলে বিমান ট্র্যাজেডি নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ তাহিরপুরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ হাওরে দেশি মাছের আকাল, বিপন্ন বহু প্রজাতি বালুর স্তূপে কাঁদছিল নবজাতক, মায়ের মমতায় কোলে তুলেন হাসিনা দিরাই পৌর বিএনপির ৯টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন সুদের চাপ সইতে না পেরে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা সুনামগঞ্জ-৫ আসনে জমিয়তের প্রার্থী মুফতি লুৎফুর রহমান নুরুল্লা গ্রামে ৩ জনের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত : পাইলটসহ নিহত ২০, আহত ১৭১ বিমানটি ঘনবসতি থেকে জনবিরল এলাকায় নিতে চেয়েছিলেন পাইলট শান্তিগঞ্জে গাছের চারা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ জগন্নাথপুর পৌরসভার বাজেট ঘোষণা জগন্নাথপুরে নকল প্যাকেটে নিম্নমানের মসলা ও কেমিক্যালযুক্ত খেজুর গুড় বিক্রি

আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ

  • আপলোড সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:১৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৭-২০২৫ ০৮:১৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাঙ্গণে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি এবং দেড় শতাধিক আহত হওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত, স্তব্ধ এবং ক্ষুব্ধ। নিহতদের অধিকাংশই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী। আগুনে ঝলসে যাওয়া ছোট ছোট দেহ, চোখের সামনে সন্তানকে হারানো মায়ের আহাজারি - এই দৃশ্য কেবল একেকটি পরিবারকে নয়, সমগ্র জাতিকে দগ্ধ করেছে। একটি যুদ্ধবিমানের বিধ্বস্ত হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আছড়ে পড়া কেবল দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি ভয়াবহ নিরাপত্তাজনিত ব্যর্থতার নাম। প্রশিক্ষণ চলাকালীন, জনবহুল আবাসিক ও শিক্ষাকেন্দ্রের ওপর দিয়ে যুদ্ধবিমান ওড়ানোর যৌক্তিকতা কোথায়? একটি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এমন মারাত্মক ঝুঁকি নেওয়া কীভাবে অনুমোদিত হতে পারে? বিমানটি ছিল এফ-৭ বিজিআই, যা চীনের তৈরি পুরোনো মডেলের একটি সংস্করণ। ইতিপূর্বে বাংলাদেশেই এই মডেলের একাধিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলট নিহত হয়েছেন। তারপরও এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিমানের ব্যবহার অব্যাহত রাখা এবং সেগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপদ মহড়া ব্যবস্থার অভাব এই দুর্ঘটনার বড় কারণগুলোর একটি বলে মনে করা হচ্ছে। আরও আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, দুর্ঘটনার সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক - তিন পক্ষই ভবনে অবস্থান করছিলেন। আগুনের তাপে ভবনের ভেতরে ঢোকার কোনো উপায় ছিল না, বহু শিশু ভবনের মধ্যেই পুড়ে মারা গেছে। এত বড় সংখ্যক প্রাণহানির দায় কে নেবে? নিছক “দুর্ঘটনা” বলেই কি রাষ্ট্র দায় এড়াতে পারে? সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষণিক উপস্থিতি ও তৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে, কিন্তু তাতে ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতা কমেনি। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছোট্ট শিশুগুলোর অসহ্য যন্ত্রণা, মা-বাবার কান্না - এই সবকিছু রাষ্ট্রযন্ত্রকে আরও মানবিক ও জবাবদিহিমূলক আচরণের প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা চাই, এই ঘটনায় একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত হোক। দোষী প্রমাণিত হলে যেন কোনো র‌্যাঙ্ক বা পদ বিবেচনায় না এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি, পুরোনো যুদ্ধবিমানগুলো কী অবস্থা, তারা নিরাপদ কিনা - তা দ্রুত পর্যালোচনা করতে হবে। প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত এলাকাগুলো নির্জন অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। এ দুর্ঘটনা শুধু বিমানবাহিনীর নয়, এটা পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য একটি সতর্ক সংকেত। আর কোনো মা যেন সন্তানকে পোড়ার ঘ্রাণে খুঁজে না ফেরেন, আর কোনো শিশু যেন বইয়ের ব্যাগ হাতে আগুনে পুড়ে না মরে - সেই নিশ্চয়তা আমরা চাই। আমরা শোকাহত, আমরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা জবাব চাই। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি যেন রাষ্ট্রের বিবেক নাড়িয়ে দেয় - এই প্রত্যাশা করি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স